গোস্বামী দূর্গাপুর ইউনিয়নের ইতিহাস
গোস্বামী দূর্গাপুর নামকরনের ইতিহাস
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার প্রাচীন গ্রাম গোস্বামী দূর্গাপুর।“বাংলা ভ্রমন” নামক একটি গ্রন্থে গোসাই দূর্গাপুর ও সেখানকার রাধারমন বিগ্রহের মন্দির সম্পর্কে জানা যায় গোস্বামী দূর্গাপুরের ইতিহাস।
ঐতিহাসিক সূত্রমতে,গোস্বামী দূর্গাপুরে গভীর অরন্য ছিল।সেই শ্বাপদ সংকুল গভীর অরন্যে কৃষ্ণ কমল গোস্বামী ওরফে কমলা কান্ত গোস্বামী নামে এক সুদর্শন তরুন সন্যাসী বাস করতেন। একদিন ঘটনাক্রমে একদল সন্যাসি পালিয়ে যাওয়ার সময় তারা পিপাসায় কাতর হয়ে পড়েন। পানি পিপাসা নিবারনের কোন জায়গা না পেয়ে তারা তরুন য্যোগি সন্যাসী গোস্বামীর আশ্রমে প্রবেশ করেন।ডাকাত দল সন্যাসীর কাছে গিয়ে জল প্রার্থনা করেন। সন্যাসী তাদেরকে ক্ষুদ্র জল পাত্র কমন্ডলূ থেকে ডাকাতদের জল পান করাতে থাকেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো শুধু ডাকাতদের একজন কে নয় ২৫/৩০ জন ডাকাত দলকে পরিতৃপ্তির সাথে জল পান করান।কিন্তু ছোট্ট পাত্র্রের জল তেমনই ছিল। গোস্বামী সন্যাসীর এ ভৌতিক কান্ড দেখে ডাকাতরা অবাক হয়ে গেল।ডাকাত সর্দার সন্যাসীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ডাকাতদলরা লুন্ঠন করা রাধারমন বিগ্রহটি সন্যাসী ঠাকুরকে প্রদান করলেন ।সন্যাসী সেই বিগ্রহটিকে নিয়মিত পূজা অর্চনা করতেন। গভীর অরন্যে তরুন সন্যাসী গোস্বামী এভাবেই দিন কাটাতে থাকেন।তথ্যমতে, একদিন জয়দিয়ার রাজা মুকুট রায় তার সুন্দরী ষোড়শী দুহিতা দূর্গাবতিকে সঙ্গে নিয়ে সেই অরন্যে শিকার করতে আসেন।ঘটনা চক্রে রাজা মুকুট রায় এবং তার কন্যা দূর্গাবতীসহ সেই সন্যাসীর কাছে যান।রাজকুমারী ও সন্যাস ঠাকুরের মাঝে কথা বার্তার এক পর্যায়ে উভয়ের চার চক্ষের মিলনে অব্যক্ত ভাব গড়ে ওঠে। দুজনই দুজনার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে। রাজা মুকুট রায় তার কণ্যার অবস্থা দেখে তরুন গোস্বামীর সাথে রাজকণ্যা দূর্গাবতীকে বিবাহ দেন।রাজা মুকুট রায় তার কন্যাকে তুলে দেন সন্যাসীর হাতে।দুর্গম ওই অরন্যে সন্যাসী গোস্বামী ও দূর্গাবতী বসবাস শুরু করেন।সেই সময় গোস্বামী ও দূর্গাবতীর কারনেই রাজা মুকুট রায় জামাতা ও কন্যার নামানুসারে সেখানকার নাম করেন গোস্বামী দূর্গাপুর।
ঐতিহাসিক মতে গোস্বামী দূর্গাপুরের মন্দিরটি মুকুট রাজার তনয় শ্রী
কৃষ্ণ রায় ১৬৭৪ খ্রিষ্টাব্দে রাধারমন বিগ্রহের জন্য নির্মান করান।জয়দিয়া গ্রাম গোস্বামী দূর্গাপুর থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে যশোর জেলার পল্লীর এক অজপাড়া গাঁ।সন্যাসী কৃষ্ণ কমল গোস্বামী রাজা প্রতাপাদিত্য কর্তৃক হেরে গিয়ে সর্বস্ব খুইয়ে দেব- আজ্ঞা পালনের জন্য রাজধানী ত্যাগ করে সেই দূর্গম ও গভীর অরণ্যে আশ্রয় গ্রহন করে ঐশি ধ্যান ও সাধন ভজনে নিজেকে মত্ত রাখেন। তার পিতা ছিলেন তৎকালীন প্রতাপশালী জমিদার।